গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নাগরিকেরা বেছে নিয়েছে তাদের নতুন নগরমাতাকে। ২০১৩ সালে যাত্রা শুরু করা দেশের সবচেয়ে বড় সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন এই নির্বাচনের আগে মেয়রের মা হিসেবে পরিচিতি পাওয়া জায়েদা খাতুন। ১৬ হাজার ১৯৭ ভোটে তিনি হারিয়েছেন নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
৪৮০ কেন্দ্রের ফলাফলে টেবিল ঘড়ি প্রতীকে জায়েদা খাতুন পেয়েছেন ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নৌকা প্রতীকে ২ লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট পেয়েছেন।
প্রথমবার ২০১৩ সালের নির্বাচনেও বিএনপির প্রার্থী এম. এ মান্নানের কাছে হেরেছিলেন আজমত। বলা যায় এবারের হারে গাজীপুরে তাঁর রাজনীতির পথ অনেকটাই সংকুচিত হল।
ফল ঘোষণার পরপরই সেখানে উপস্থিত গাজীপুরের সাবেক মেয়র, আওয়ামী লীগ থেকে স্থায়ী বহিষ্কার হওয়া জাহাঙ্গীর আলম নিজের প্রতিক্রিয়ার বলেন– ‘এ জয় গাজীপুরে মানুষের।’
পুরো নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের কারণে ধারণা ছিল ভোটগ্রহণের পর দুয়েক ঘন্টার মধ্যেই হয়তো ফলাফল ঘোষণা হয়ে যাবে। সেই সময় গিয়ে ঠেকল রাত দেড়টায়। বেলা সোয়া একটার কিছু পরে ৪৮০ কেন্দ্রের মধ্য সবগুলোর ফলাফল ঘোষণা করেন জিসিসি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ফরিদুল ইসলাম। এ সময় বঙ্গতাজ অডিটরিয়ামে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম ছাড়া আর কোনো মেয়র প্রার্থী বা তাদের সমন্বয়কদের কেউ উপস্থিত ছিলেন না।
এ সময় পুলিশের উপকমিশনার ইব্রাহীম খান বলেন, ‘ফল ঘোষণার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে কোনো মিছিল এবং স্লোগান দেওয়া যাবে না। উৎসবমুখর পরিবেশে যেভাবে ভোট দিয়েছেন। যাই ফলাফল হয়েছে সবাই মেনে, সংযত থাকবেন।’
২০১৮ সালে নৌকা প্রতীকে গাজীপুরের মেয়র নির্বাচিত হন ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে মেয়াদ পূরণের আগেই নিজের পদ হারাতে হয় তাকে। দল থেকে সাময়িক বরখাস্তও হন। এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর পর হন স্থায়ী বহিষ্কার। কিন্তু নিজের বয়স্ক মাকে নিয়ে মাঠে ছিলেন। আম্মাজান চলচ্চিত্রের শীর্ষ সংগীত আম্মাজান আম্মাজান আপনি বড় মেহেরবান, এই গান বাজিয়ে গত কয়েক দিন ধরে ছুটেছেন গাজীপুরের এ মাথা থেকে ও মাথা। ২৫ মের নির্বাচনের ফলাফল নিজেই বলে দিল অনেক প্রশ্নের উত্তর।