সম্প্রতি বাংলাদেশ ভারত যৌথ উদ্দ্যোগে নির্মাণাধীন চারুকলা অনুষদ ভবনের জন্য আল বেরুনী হলের সম্প্রসারিত অংশ সংলগ্ন এলাকায় প্রায় দুইশত গাছ কাটা হয়। এর মধ্যে প্রায় ৬০ টি গাছ মেহগনি গাছ ছিল বলে জানিয়েছেন বিভাগ সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া গাছ কাটার পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে মেহগনি গাছকে ক্ষতিকর বলে উল্লেখ করেন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। তবে এব্যাপারে ভিন্নমত পোষণ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে ও নিজেদের প্রোফাইলে একাধিক শিক্ষার্থী স্ট্যাটাসে উল্লেখ করেন, ‘পরিবেশ দিবস উপলক্ষে ৬০টি ক্ষতিকারক মেহগনি গাছ কেটে ২৬০ টি উপকারী ফলজ, গুল্ম ও ফুলের গাছ রোপন করেছে চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা।’’ এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যকর্মীদের সাথে কথা বলার সময় প্রকল্প পরিচালক সহযোগী অধ্যাপক এম এম ময়েজউদ্দিন মেহগনি গাছকে ক্ষতিকারক বলে একাধিকবার উল্লেখ করেন।
এ বিষয়ে চারুকলা অনুষদ ভবনের প্রকল্প পরিচালক সহযোগী অধ্যাপক এম এম ময়েজউদ্দিন বলেন, ‘মেহগনি ক্ষতিকর কী না এ বিষয়ে আমি অনেক কিছু জানি। যেহুতু গাছগুলোকে কেটে ফেলা হয়েছে সেহুতু আমি এ বিষয়ে কিছু বলতে চাচ্ছি না। বেশ কিছু মাধ্যমে এই গাছকে আমরা ক্ষতিকারক বলে জানতে পেরেছি।’ তবে এই ব্যাপারে ভিন্নমত পোষণ করেছেন বিশ্ববিদ্যালেয় উদ্ভিদবিজ্ঞানী ও পরিবেশবিদরা।
মেহগনি গাছ ক্ষতিকর কী না এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ছালেহ আহাম্মদ খান বলেন, ‘মেহগনি গাছকে ক্ষতিকর বলার কোনো সুযোগ নেই। এর সবুজ অংশ বেশি হওয়ায় এই গাছের পরিবেশের উপর ভাল প্রভাব রাখে। আর আকাশমনি গাছ তখন ক্ষতিকর যখন তার আশেপাশে কোনো দেশীয় গাছ বেড়ে উঠতে শুরু করে। তবে একবার দেশীয় গাছ আকাশমনী গাছের সাথে টিকে গেলে তা আর ক্ষতিকর বলার সুযোগ নেই। ঢালাওভাবে কখনোই মেহগনি বা আকাশমনী গাছকে ক্ষতিকর বলা যাবে না।’
এ বিষয়ে পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মো জামাল উদ্দীন বলেন, ‘মেহগনি মোটদাগে ক্ষতিকর বা উপকারী বলা যাবে না। এটা একটা তুলনামূলক আলোচনা। পরিবেশের উপর এর উভধর্মী প্রভাব বিদ্যমান। এই ধরনের গাছ যেখানে থাকে সেখানে দেশীয় গাছ জন্মাতে পারে না সেভাবে। তবে জাহাঙ্গীরনগরে এই গাছগুলো দীর্ঘদিন ধরে এইস্থানে থাকায় এরা নিজস্ব বাস্তুতন্ত্র তৈরি করে ফেলেছে। হুট করে এভাবে গাছগুলো কেটে ফেলা স্বাভাবিক বাস্তুতন্ত্রকে নষ্ট করে ফেলে। ’