জামালপুরের মেলান্দহে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের কর্মকর্তা পরিচয়ে চাঁদা দাবির অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সোমবার (১৭ মার্চ) বিকালে উপজেলার নাংলা ইউনিয়নের হরিপুর এলাকা থেকে তাকে আটক করে পুলিশ। অভিযুক্ত সাজ্জাদ হোসেন সাকিব জামায়াতে ইসলামীর নেতা সামিউল হক ফারুকীর ভাতিজা বলে দাবি করা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে জামায়াতের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার হরিপুর এলাকায় মাটি উত্তোলন করে বিক্রি করছিলেন রেজাউলসহ কয়েকজন মাটি ব্যবসায়ী। কিছুদিন আগে মনির হোসেন জুয়েল (৩৫) মাটি উত্তোলন করতে জেলা প্রশাসকের (ডিসি) অফিসে টাকা দিতে হবে বলে ব্যবসায়ীদের জানায়। এরপর, প্রতি সপ্তাহে ডিসি অফিস ও এসপি অফিসে ৩৩ হাজার টাকা দেয়ার চুক্তি হয় মাটি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে। এর আগে ডিসি অফিসের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে তারা মো. রেজাউল করিমের কাছ থেকে সাড়ে চার হাজার টাকা নেয়।

সোমবার বিকালে সাজ্জাদ হোসেন সাকিব ও মনির হোসেন জুয়েল চুক্তির টাকা নিতে গেলে মাটি ব্যবসায়ীদের সন্দেহ হয়। একপর্যায়ে ওই এলাকার লোকজন তাদের দুজনকে ঘেরাও করে রাখে। পরে মনির হোসেন জুয়েল কৌশলে পালিয়ে যান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সাজ্জাদ হোসেন সাকিবকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

এ বিষয়ে জামায়াতের প্রেস ও মিডিয়া সেক্রেটারি জাকিউল ইসলাম ও জেলা ছাত্র শিবিরের সভাপতি আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, ‘সাজ্জাদ হোসেন সাকিব নামে আমাদের কোনো সদস্য বা কর্মী নেই। তার সঙ্গে ইসলামী ছাত্রশিবিরেরও কোনো সম্পর্ক নেই।’ জামায়াত নেতা ড. সামিউল হক ফারুকীকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

ভুক্তভোগী মো. রেজাউল করিম জানান, জামায়াত নেতার ভাতিজা প্রশাসনের কর্মকর্তা পরিচয়ে সাজ্জাদ হোসেন সাকিব ও তার সহযোগী মো. মনির হোসেন জুয়েল চাঁদার জন্য চাপ দিয়ে আসছিলেন। একপর্যায়ে তারা এক লাখ টাকা দাবি করে এবং প্রতি সপ্তাহে চাঁদা দেওয়ার শর্ত দেয়। আজ তারা টাকা নিতে আসলে আমাদের সন্দেহ হয়। পরে গ্রামের লোকজন তাদের আটক করে পুলিশে দেয়।

মেলান্দহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, চাঁদাবাজির অভিযোগে সোমবার রাত ১০টার দিকে মো. রেজাউল করিম বাদী হয়ে সাজ্জাদ হোসেন সাকিবের নামে মেলান্দহ থানায় মামলা দায়ের করেন। আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মঙ্গলবার তাকে আদালতে পাঠানো হবে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের অভিযান চলমান।