মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় রাইজিং গ্রুপের পপুলার প্যাকেজ অ্যান্ড এক্সেসোরিজ লিমিটেডে সংঘটিত ডাকাতির ঘটনায় ডাকাত চক্রের ১২ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ও সাটুরিয়া থানা পুলিশের যৌথ অভিযানে ডাকাত সদস্যদের গ্রেফতারসহ লুট হওয়া মালামাল উদ্ধারসহ ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত অস্ত্র ও বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৮ ফেব্রুয়ারি রাতে কারখানার কর্মচারীরা প্রতিদিনের মতো খাবার শেষে ঘুমিয়ে পড়েন। গভীর রাতে ২০-২৫ জন মুখোশধারী ডাকাত নিরাপত্তা দেওয়াল টপকে কারখানার প্রধান ফটকের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। এরপর তারা দেশীয় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে কারখানার কর্মচারীদের হাত-পা বেঁধে ফেলে এবং ফিনিশিং ফ্লোরে থাকা ডাইং পলিব্যাগ ও নগদ টাকা লুট করে একটি পিকআপে করে পালিয়ে যায়। ভোর রাতের দিকে এক কর্মচারী কৌশলে হাতের বাঁধন খুলে ঢাকায় অবস্থানরত ফ্যাক্টরির ম্যানেজার মো. সাহেব আলীকে ফোন করে বিষয়টি জানান। পরে কারখানার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আলোচনা করে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
ঘটনার পর মানিকগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মোছা. ইয়াছমিন খাতুনের নির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) সুজন সরকার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মানিকগঞ্জ সদর সার্কেল) সালাউদ্দিন রাব্বির সার্বিক তত্ত্বাবধানে বিশেষ অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে সাটুরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ শাহিনুল ইসলাম, জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ওসি মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন, সাটুরিয়া থানার ওসি (তদন্ত) মানবেন্দ্র বালোসহ একাধিক পুলিশ সদস্য অংশ নেন।
তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে অভিযানে প্রথমে পাবনার চাটমোহর থেকে আসামি শরীফকে গ্রেফতার করা হয়, যার কাছ থেকে লুণ্ঠিত দুটি মোবাইল উদ্ধার করা হয়। পরে শরীফের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকার আশুলিয়া এলাকা থেকে ডাকাতির ঘটনায় জড়িত আরও ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত অন্য ১১ জন হচ্ছে, সিরাজগঞ্জ জেলার মৃত কানছু মিয়ার ছেলে মোঃ মোকাদ্দেস (৪০), চাঁদপুর জেলার তারাপদ হালদারের ছেলে রাসেল (২০), রংপুর জেলার আশরাফ আলীর ছেলে জাহিদ হাসান (৩৫), সিরাজগঞ্জ জেলার মৃত মোকছেদের ছেলে আবু সাঈদ (৫০), ফজলুল হকের ছেলে স্বপন (২০), মোফাজ্জল হোসেনের ছেলে সাজেদুল ইসলাম (৩৫)।পাবনা জেলার আব্দুর রশিদের ছেলে লালচান (৪১), সিরাজগঞ্জ জেলার মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে লিয়াকত আলী (৫৪), খোদা বক্সের ছেলে জাহাঙ্গীর (২৫), টাঙ্গাইল জেলার দেলোয়ার হোসেনের ছেলে কাউছার (২১), মোকাদ্দেসের ছেলে হৃদয় হাসান (১৯)।
পুলিশ জানায়, তাদের হেফাজত থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত দুটি পিকআপ, তিনটি ছ্যানদা, চাপাতি, চারটি কাটার, মুখোশ ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। পরে গ্রেফতারদের আদালতে উপস্থাপন করা হলে আসামি লিয়াকত আলী (৫৪) স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দেন।
এ ব্যাপাওে সাটুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ শাহিনুল ইসলাম বলেন, আদালতে পাঠিয়ে গ্রেফতার কৃতদের বিরুদ্ধে রিমান্ডের আবেদন করা হবে। বাকী সদস্যদেরর গ্রেফতার অভিযান অব্যহত আছে।